ওয়াকফ আইন আসলে কি? মুসলিমদের কি অসুবিধা হতে পারে?

ওয়াকফ আইন (Waqf Amendment Bill 2025)

ইতিমধ্যেই দর্শকরা জেনে গেছেন ওয়াকফ আইন সংশোধনী বিল পাস হয়ে গেছে। কিন্তু কি এই ওয়াকফ সম্পত্তি? কেনই বা এই ওয়াকফ আইন কে সংশোধন করার প্রয়োজন পড়ল? কি কি সংশোধন করা হয়েছে সমস্ত কিছু বিস্তারিত আজকের প্রতিবেদনে জানবো।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Channel Join Now
ওয়াকফ সম্পত্তি আসলে কি?

মুসলিম সম্প্রদায়ের কোন স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তিকে দলিলের মাধ্যমে আল্লাহর নামে করে দেওয়াকে ওয়াকফ সম্পত্তি বলা হয়। কাগজ কলমে কাজ শুরু হওয়ার বহুদিন আগে থেকেই মৌখিকভাবে এই ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালিত হওয়ার পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে।

এই সম্পত্তি কারা ব্যবহার করে?

ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি জনসেবার কাজে ব্যবহার করা হয়। যদি কেউ উত্তরসূরি থেকে থাকেন তাহলে তিনি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে পারেন ঠিকই, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই জমিগুলি কবর, মসজিদের নির্মাণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ, গরিব মানুষকে আশ্রয় দেওয়া প্রভৃতি কাজে ব্যবহার করা হয়। যদিও এই সম্পত্তি কখনো হস্তান্তর করা যায় না অর্থাৎ কোন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে বিক্রি করতে পারবেন না।

এই সম্পত্তি কারা দেখাশোনা করেন?

ওয়াকফ সম্পত্তি সাধারণত ওয়াকফ বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয়। ১৯৬৪ সালে সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল গড়ে তোলা হয়েছিল। গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে ওয়াকফ বোর্ডগুলি পরিচালনা করে এই কাউন্সিল। এই কাউন্সিল কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা করে এই সম্পত্তিগুলি নিয়ে।

১৯৯৫ সালে ওয়াকফ আইন তৈরি হয় :

১৯৯৫ সালে ওয়াকফ আইন তৈরি করা হয়, এই আইনটি সংশোধন করা হয় ২০১৩ সালে। ২০১৩ সালের আইন সংশোধনী বিলে ওয়াকাফ বোর্ড গুলিকে ক্ষমতা দেওয়া হয় যাতে তারাই ওয়াকফ সম্পত্তি চিহ্নিত করতে পারে।

৫ এপ্রিল ওয়াকফ আইন সংশোধিত হল :

বর্তমানে ৫ এপ্রিল ২০২৫ তারিখের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হস্তাক্ষরের মাধ্যমে নতুন করে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস হলো। এই নতুন সংশোধনী বিলে নতুন পরিবর্তন এসেছে।

নতুন কি কি নিয়ম পরিবর্তিত হল?
  • এই নতুন সংশোধনী বিলে ওয়াকফ বোর্ডের হাত থেকে ক্ষমতা সরিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। নতুন বিলে বলা হয়েছে, ওয়াকফ সম্পত্তি বাধ্যতামূলক ভাবে ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর এর অফিসে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
  • আইন কার্যকর হওয়ার আগে বা পরে যদি কোন সরকারি সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে, তবে সেটি সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পরে আর ওয়াকফ সম্পত্তি থাকবে না। ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর ঠিক করে দেবে সেটি ওয়াকফ নাকি সরকারি সম্পত্তি। ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর এর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।
  • সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে ডিসটিক কালেক্টর চাইলে সেই জমির রেভিনিউ রেকর্ডে বদল আনতে পারেন। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করতে হবে রিপোর্ট পেশ না করা পর্যন্ত ওয়াকফ প্রপারটি বলে গণ্য হবে না।
  • এতদিন পর্যন্ত যেখানে কোনরকম নথিপত্রের প্রয়োজন ছাড়াই মৌখিকভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি চিহ্নিত করা যেত, বর্তমানে তা আর হবে না, কোনরকম নথি না থাকলে সেই জমি বিতর্কিত জমি বলে ধরা হবে।
  • ওয়াকফ বোর্ডের কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক থাকলে হাইকোর্টে আবেদন করা যাবে।
এই আইনের মূল উদ্দেশ্য কি?

কেন্দ্র সরকার দাবি করছে, এই আইন মুসলিম সমাজের সার্বিক উন্নয়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মুসলমান নারীদের ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরীর মাধ্যমে তাদের শক্তিশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

সরকারের মত, গোটা দেশজুড়ে প্রায় ৮.৭২ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে, যা সঠিকভাবে পরিচালিত হলে মুসলিম সমাজের পাশাপাশি গোটা দেশ উপকৃত হবে।

পিএম কৌশল বিকাশ যোজনায় প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রতি মাসে ৮ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

Ration Card Rules : দুমাস রেশন না নিলেই বাতিল হবে রেশন কার্ড।

Md Cyber Zone -এর কনটেন্ট রাইটার। একজন বিশিষ্ট ইউটিউবার। বিগত চার বছরের বেশি সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত।

Share this content:
WhatsApp Group Join Now
Telegram Channel Join Now

Leave a Comment