আপাতত ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের বিরতি চলছে। কিন্তু পরিস্থিতি আগের মতো স্বাভাবিক নয় এবং কবে স্বাভাবিক হবে তাও বলা যায় না। এই পরিস্থিতিতে দেশের প্রতিটি মানুষের খাদ্য এবং স্বাস্থ্য নিয়ে বিশেষ সচেতন হয়েছে প্রশাসন।
আগামী তিন মাসের জন্য খাদ্যদ্রব্য মজুত করার নির্দেশ যেমন দেওয়া হয়েছে তেমনি সরকারি হাসপাতাল গুলিতে রক্ত, ওষুধ এবং চিকিৎসার জন্য যা যা সরঞ্জাম প্রয়োজন হয় তার সমস্ত মজুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ রাজ্য পুলিশের ডিজি, সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলির সচিব এবং প্রতিটি জেলার জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ সুপারদের নিয়ে একটি বৈঠকে বসেন। এই বইটা কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রতিটি জেলায় আগামী ৩ মাসের জন্য খাদ্যদ্রব্য মজুত করতে হবে।
১৯ মে – এর মধ্যে জুন মাসের বরাদ্দ রেশন সামগ্রী অর্থাৎ চাল, গম, আটা প্রভৃতি গুদাম যত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর সাথে সাথে ২৬ মে – এর মধ্যে জুলাই মাসের রেশন সামগ্রী মজুত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ৩১ মে তারিখের মধ্যে আগস্ট মাসের রেশন সামগ্রী মজুত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্র সরকার তথা দিল্লির তরফ থেকেও রাজ্যের কাছে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় ভারতের প্রতিটি রাজ্যকে মে মাসের মধ্যেই আগামী তিন মাস অর্থাৎ জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসের খাদ্য সামগ্রী যা রেশনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বিতরণ করা হয়ে থাকে তা মজুদ করতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনায় ৩ মাসের জন্য প্রতিটি রাজ্যকে খাদ্যশস্য একসঙ্গে মজুত করতে বলা হয়েছে।
এক মাসে পশ্চিমবঙ্গের রেশন সামগ্রী বিতরণ করার জন্য প্রয়োজন হয় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার ৮৮৫ মেট্রিক টন চাল গম। অর্থাৎ ৩০ মে তারিখের মধ্যে ৯ লক্ষ ৯২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন মতন চাল, গম তুলে নিতে হবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে।
কিন্তু সামনে এই বর্ষাকাল, তাই এত পরিমাণ খাদ্য মজুদ করতে সমস্যা হবে। এই বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য যাতে রেশন দোকানে পড়ে পড়ে নষ্ট না হয় তাই কেন্দ্রীয় গুদামে মজুদজাত করার পরামর্শ দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু।
এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য নিয়েও সচেতন থাকছে কেন্দ্র এবং রাজ্য। মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, সরকারি হাসপাতালগুলির সুপার, নার্সিং আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিং ছেড়েছেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। আগামী দু মাসের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, রক্ত, ইনজেকশন প্রভৃতি মজুদ করার কথা বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি দেশি সংখ্যক এম্বুলেন্স তৈরি রাখতে বলা হয়েছে। মেডিকেল অফিসার, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের অ্যাডভান্স লাইভ সাপোর্ট ট্রেনিং গ্রহণ সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
সর্বোপরি বলা চলে, ভারত এবং পাকিস্তানের সংঘর্ষ বর্তমানে স্থগিত থাকলেও তা ভবিষ্যতে কিরূপ নেবে তা বলা যাচ্ছে না। তাই আগে থেকেই কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার খাদ্য ও স্বাস্থ্য বিষয়ে বিশেষ সচেতন।