লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প
২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বাদ যেতে চলেছে হাজার হাজার মহিলার নাম। লক্ষীর ভান্ডারের তালিকায় আপনার নামটি থাকছে তো? যাচাই করুন বিষয়টি।
লক্ষীর ভান্ডারের উদ্দেশ্য :
২০২১ সালে এই প্রকল্প চালু হয়। তখন প্রতিমাসে সাধারণ শ্রেণি মহিলারা ৫০০ টাকা এবং তপশিলি জাতি ও উপজাতির মহিলারা প্রতিমাসে ১০০০ টাকা করে পেতেন। পরে এই টাকা বেড়ে ১০০০ এবং ১২০০ টাকা হয়। এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হল পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি মহিলাকে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করা এবং এই অর্থ প্রদান করার মধ্য দিয়ে তাদের সামাজিক, আর্থিক ভাবে সুরক্ষিত রাখা, সমাজের স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তোলা হয়। কিন্তু এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার নির্দিষ্ট কিছু মানদন্ড রয়েছে। সেগুলি পূর্ণ না করলে এই ভাতা বন্ধ হবে।
লক্ষীর ভান্ডারের সাফল্য :
এর আগে ভারতের কোন রাজ্যে এরকম ধরনের কোন প্রকল্প আসেনি। প্রতিটি রাজ্যের কাছে এই প্রকল্প একটি দৃষ্টান্ত স্বরূপ। তার সাথে এই প্রকল্প শাসকদলের ভোট বাক্সে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে। সব মিলিয়ে বলা যায় এই প্রকল্প শাসক দলের অন্যতম ভোট অস্ত্র।
বাংলা আবাস যোজনার টাকা কবে ঢুকবে? কোন এলাকায় আগে ঢুকবে?
নিয়মে কড়াকড়ি :
অন্যান্য প্রকল্পের তুলনায় লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের ক্ষেত্রে অনেকটাই মানবিকতা বজায় রেখেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সম্প্রতি ১৬ দফা নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে লক্ষীর ভান্ডারসহ সমস্ত সরকারি প্রকল্পের টাকা ছাড়ার আগে সরকারি আধিকারিকদেরকে ১৬ দফা নিয়ম মানতে হবে। এখানেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে সাধারণের জন্য।
১৬ দফা নির্দেশিকা প্রকাশ করল রাজ্য। সমস্ত সরকারি প্রকল্পের টাকা পাওয়া আরও কঠিন হলো।
লক্ষীর ভান্ডার থেকে নাম বাদ যাওয়ার কারণ কী?
সম্প্রতি সরকারি ভাতার টাকা পাওয়ার জন্য নিয়ম শক্ত করা হয়েছে। লক্ষীর ভান্ডার থেকে বাদ গেছে অনেক নাম এবং সামনের বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বাদ যেতে চলেছে আরও অনেকের নাম।
১) জাতিগত শংসাপত্রের অপব্যবহার :
এমন অনেক মহিলা রয়েছেন যারা অন্য পথে কাস্ট সার্টিফিকেট বার করে সেটি লক্ষীর ভান্ডারে যুক্ত করে বেশি টাকা পাওয়ার সুবিধা উপভোগ করছেন। ভুয়ো শংসাপত্র জমা দেওয়ার কারণে তাদের নাম বাদ পড়ছে।
২) জয়েন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার :
সরকারি প্রকল্পের ভাতার সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রতিটি ব্যক্তির নিজস্ব একটি সেভিংস একাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক। লক্ষীর ভান্ডারের ক্ষেত্রে অনেকেই জয়েন্ট একাউন্ট যুক্ত করেছেন প্রকল্পের সাথে। ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার না করায় নাম বাদ পড়ছে অনেকের।
৩) একাধিক ব্যাংক একাউন্ট :
একজনের নামে যদি একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকে সেক্ষেত্রে এই প্রকল্প থেকে নাম বাদ যাবে।
৪) বয়সের ভুল তথ্য পেশ করা :
যেহেতু ২৫ বছর পূর্ণ হলে তবেই এই প্রকল্পে আবেদন করা যায়, এক্ষেত্রেও অনেক মহিলা এরকম আছেন যারা বয়সের প্রমাণপত্র হিসেবে ভুল তথ্য পেশ করেছেন এবং এই প্রকল্পে আবেদন করেছেন, তাদের অনেকের নাম বাদ পড়েছে।
৫) ব্যাংকে কেওয়াইসি না করা :
এখন সমস্ত প্রকল্পের সাথে সাথে এই প্রকল্পেও এটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিটি মহিলাকে তাদের ব্যাংক একাউন্টে কেওয়াইসি সম্পূর্ণ করে রাখতে হবে।
৬) ব্যাংকের সাথে আধার লিঙ্ক :
অন্যান্য সমস্ত সরকারি প্রকল্পের সাথে সাথে এই প্রকল্পেও এটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিটি মহিলাকে তার ব্যাংকের একাউন্টের সাথে আধার কার্ড সংযুক্ত করে রাখতে হবে।
সিনিয়র সিটিজেন কার্ডে অজস্র সুবিধা। ট্রেন, বাসের টিকিট সহ সুদের হার সবেতেই আকর্ষণীয় ছাড়।
উপরিউক্ত নিয়মগুলো যদি কোন মহিলা না মানে না তাহলে হঠাৎ করেই তার প্রকল্পের টাকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এই প্রকল্পে যদি আপনি আবেদন করে থাকেন তাহলে অনলাইনে স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন। লক্ষ্মীর ভান্ডারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটটি হল – এখানে ক্লিক করুন।